সাজেক উপত্যকা (Sajek Valley) বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নের একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থল। রাঙামাটির একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই সাজেক ভ্যালিতে রয়েছে দুটি পাড়া- রুইলুই এবং কংলাক। ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত রুইলুই পাড়া ১,৭২০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। আর কংলাক পাড়া ১,৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। সাজেক ভ্যালি “রাঙামাটির ছাদ” নামেও পরিচিত। পাহাড়ের মধ্য দিয়ে অনেক ছোট ছোট নদী প্রবাহিত হয়েছে তাদের মধ্যে কাচালং এবং মাচালং বিখ্যাত। উপত্যকার প্রধান জাতিগত সংখ্যালঘু হ’ল চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, পাঙ্কুয়া, লুশাই এবং সিগমা। রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ছাদের জন্য জায়গাটি পাহাড়ি রানী হিসাবে পরিচিত। মারিশা সাজেক উপত্যকার কাছে একটি জায়গার নাম। বেশিরভাগ বাড়ি বাঁশ দিয়ে তৈরি। সাজেকের কাছে আরও একটি জায়গা রয়েছে এটি কনলাক এবং এটি কমলা বাগানের জন্য বিখ্যাত।
সাজেক(Sajek Valley) এর পর্যটন স্থান(Tourist place):
বাংলাদেশী বা বিদেশী পর্যটক দের জন্য সাজেক ভ্যালি একটা বিশেষ স্থান। পর্যটক দের আকর্ষন করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু জায়গা। তন্মধ্যে কংলাক পাহার, আদিবাসীদের গ্রাম, প্রমুখ। এর মধ্যে বেশি আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় দৃশ্য হোল সূর্যদয়, সূর্যাস্ত, রাতে বিভিন্ন স্থানে বারবিকিউ পার্টি ইত্যাদি । সাজেকের সকল হোটেল গুলো খুব সুন্দর ও পরিষ্কার পরিছন্ন।
সাজেক ভ্যালী(Sajek Valley) তে হোটেল সংখ্যা কম থাকার কারণে আপনাদের অগ্রীম বুক দিয়ে যেতে হবে।
সাজেক(Sajek Valley)কিভেবে যাবেন(How to go):
প্রথম ধাপঃ
সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলেয়া অবস্থিত হলেও আপনাকে যেতে হবে খাগড়াছড়ি দিয়ে। কারন রাঙামাটি দিয়ে সাজাকে যাওয়ার সোজা কোন পথ নাই।
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়িঃ
সাজেক ভ্যালী (Sajek Vally) তে যেতে প্রথমে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি তে যেতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি সরাসরি যে সকল বাস যায় তার মধ্যে সেন্টমার্টিনহুন্দাই, শ্যামলী এন.আর. ট্রাভেলস, এবং হানিফ পরিবহন অন্যতম। আর এই বাস গুলোর মাধ্যমে যেতে হলে আপনাকে প্রথম যেতে হবে আরামবাগ, সায়দাবাদ কিংবা কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ডে। রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে যাবে এবং সকাল ৬টার মধ্যে খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ড এ গিয়ে পৌঁছাবে।
যখন আপনারা বাসের টিকিট করবেন তখন অবশ্যই রিটার্ন টিকিট করে নিয়ে যেতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়িঃ
সাজেক ভ্যালী (sajek Vally) তে যেতে প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি তে যেতে হবে।চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়িতে যেতে চাইলে আপনি খুব সহজে ই যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম শহরের প্রতি ঘন্টায় শান্তি পরিবহন ছেড়ে যায় খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্য। আপনি এমন সময় চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে হবে যেন সকাল ৮ টায় মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌছান।
পৌছানর পর ঝটপট সকালের নাস্তা করে নিতে হবে। যেন আপনি খুব তাড়াতাড়ি চান্দের গাড়ী ভাড়া করতে পারেন।

গাড়ী ভাড়া (Rent):
একটি প্যাকেজ সহ একটি চন্দর গারি ভাড়া করুন।
- এক দিনের জন্য = ৭০০০ টাকা থেকে ৯০০০ টাকার মধ্যে
- দুই দিনের জন্য = ১২০০০ টাকা থেকে ১৩০০০ টাকার মধ্যে
এই প্যাকেজ এর মধ্যে আপনাকে ওনারা কয়েকটা জায়গায় ঘোরাবেন। তার মধ্যে রয়েছে সাজেক ভ্যালী, রিচং ঝর্না, আলুটিলা গুহা আর কিছু জায়গায় ।
শাপলা চত্বর থেকে বাঘাইহাট আর্মি চ্যাম্প। সকাল দশটার মধ্যে পৌছাতে হবে । চিন্তার কোন কারণ নাই। গাড়িওলা আপনাকে সঠিক সময়ে পৌছাবে।
আর্মি চ্যাম্পে চেকঃ
সাজেক ভ্যালী (Sajek Valley) যেহেতু সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী আপনার ভ্রমন টা নিরাপদ করার জন্য আপনাকে সকাল দশটার মধ্যে সেনাবাহিনীকে অবহিত করতে হবে।
আর্মি চ্যাম্প থেকে মাচালং বাজার:
বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প থেকে আপনারা মাচালং বাজারে গিয়ে পৌছাবেন। সেখানে আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে ক্রসিং করার জন্য কারণ সাজেক ভ্যালী থেকে ফেরত গাড়ী গুলো ওখানে অপেক্ষায় থাকবে । যা পরদিন আপনাদেরও করে হবে।
মাচালং বাজার থেকে সাজেক ভ্যালি(Sajek Valley):
আপনারা দুপুর ২ টা থেকে ৩টার মধ্যে সাজেক ভ্যালী তে পৌছাবেন। এবং হোটেল এ চেক ইন করতে হবে। চেক ইন করের পর আপনাদের যে যাজ টা করতে হবে সেটা হোল পাশের হোটেলে আপনাদের দুপুরের খাবারের অর্ডার করে হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হতে হবে। ফ্রেশ হওয়ার পরে আপনাকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে হবে।



কংলাক পাহাড়ঃ
সাজেক ভ্যালীর (Sajek Valley) সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান এর মধ্যে কংলাক পাহাড়। দুপুরের খাবারের পর গাড়ী নিয়ে কংলাক পাহাড়ে গিয়ে আপনারা সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন।
আপনাদের জানানো যাচ্ছে, সাজেক ভ্যালী তে খাবার এর অর্ডার কমপক্ষে ২ ঘন্টা পূর্বে করতে হবে ।
সূর্যদয়ঃ
সাজেকে (Sajek Valley) গিয়ে সূর্যদয় দেখবেন না এটা তো হয় না। পরদিন সকালে হ্যলিপ্যাড এ গিয়ে আপনারা খুব সুন্দর এই দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।



সবুজ পাহাড়ের পানে,
তুমি চেয়ে আছো আনমনে
আলতো স্পর্শে মেঘগুলো ভাসছে দেখ ওই গগনে
পাহাড়ে নীড় তোমার,ডানা মেলে গগনে উড়া তুমি কোন পাখি
যাকে দেখে মন তৃপ্ত,জুড়িয়ে যায় আঁখি।
সূর্যদয় দেখা শেষে সকালের নাস্তা করে আবার খাগড়াছড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে। কারণ দিনে দুইটা চেক আউট হয় একটা সকাল দশটায় অন্যটা বিকাল তিনটায়। আপনাকে যে কোন একটা বেছে নিতে হবে কারণ যখন আপনি চান্দের গাড়ি ঠিক করেছেন তখনই তাদের বলে দিয়েছিলেন, কখন ফিরবেন, সকাল দশটায় নাকি বিকাল তিনটায় । চান্দের গাড়ি আপনাকে নিয়ে খাগড়াছড়ির কিছু পর্যটন স্পটে গিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে তার মধ্যে রয়েছে।
বাজেট(Budget):
বাস ভাড়াঃ
- এসি বাসঃ ১১০০টাকা
- নন এসি বাসঃ ৫০০-৬০০ টাকা
চান্দের গাড়ীঃ
- এক দিনের জন্য = ৭০০০ টাকা থেকে ৯০০০ টাকার মধ্যে
- দুই দিনের জন্য = ১২০০০ টাকা থেকে ১৩০০০ টাকার মধ্যে
হোটেলঃ
- সিঙ্গেলঃ ৩০০০-৪০০০ টাকা
- ডাবলঃ ৪০০০-৬০০০টাকা
সিজন অনুযায়ী এই ভাড়া উঠানামা করে।
এছাড়া খাবারে টাকা আপনাদের খাবার মেনুর উপর নির্ভর করবে।
হোটেলঃ
- রুনময় রিসোর্ট-+8801865347688
- মেঘ কাব্য- +8801852292688
- গারবা -+8801858114727
- হিমাচল -01811354733
- মেঘ মাচং- 01822168877
- মেঘ কুঞ্জ -01815761065
- সাজেক রিসোর্ট -+8801865347688
- মেঘ ভিউ -+8801841236044
এছাড়াও আরো অনেক রিসোর্ট রয়েছে সাজেক ভ্যালী (Sajek Valley) তে ।
Thank You Very Much for your Tour Plan
Thanks